শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলার কোদালপুর ইউনিয়নের ঠান্ডার বাজার এলাকা। মেঘনার এ শাখা নদীটির একপাশে যখন জিওব্যাগ ফেলে ভাঙ্গন রোধের চেষ্টা চালাচ্ছে পানি উন্নয়ন বোর্ড, তখন একটি প্রভাবশালী মহল নদীর মাঝখানে কয়েকটি ড্রেজার বসিয়ে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকার বালি উত্তোলন করে বিক্রি করছে। যার প্রেক্ষিতে হুমকির মুখে পড়েছে জালালপুর ও ঠান্ডার বাজার এলাকার কয়েকশ বাড়িঘর, ফসলী জমি ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা । যা নদীতে বিলীন হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে।
কিন্তু রহস্যজনক কারনে এসব ড্রেজার উচ্ছেদের বিষয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া হচ্ছেনা তেমন কোন পদক্ষেপ। আর নামমাত্র কিছু অভিযান পরিচালনা করা হলেও স্থানীয়রা এসব অভিযানকে তামাশা ও আইওয়াশ বলছে। তবে গোসাইরহাট উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এসব অবৈধ কর্মকান্ডের সাথে তাদের সংশ্লিষ্টতার কথা ছুড়ে ফেলেছে। তারা বলছে, এসব অবৈধ ড্রেজার উচ্ছেদে তাদের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ আইনানুগ কার্যক্রম অব্যহত রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়দের সাথে আলাপ করে জানাগেছে, প্রভাবশালী সুমন দেওয়ান, দেলোয়ার হোসেন, সুজন দেওয়ান, মাসুদ মৃধা এবং খবির খান নদীটিতে অবৈধ ড্রেজার বসিয়ে মাসের পর মাস বালু উত্তোলন করে বিক্রি করছেন। প্রতিদিন ৫০ থেকে ৬০ জাহাজ বালি বিক্রি করছে তারা। অথাৎ প্রতি জাহাজ বালি ১০ হাজার টাকা করে বিক্রি করলেও এ প্রভাবশালী মহলটি প্রতিদিন হাতিয়ে নিচ্ছে (৬০★১০,০০০)= ৬ লক্ষ টাকা। কিন্তু প্রভাবশালী হওয়ায় স্থানীয় কেউ তাদেরকে কিছু বলতে পারছে না।
মঙ্গলবার সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, নদীর মাঝখানে চারটি ড্রেজার বসানো রয়েছে। কয়েকটি ড্রেজার চালু রয়েছে। সেখান থেকে মাঝারি আকৃতির জাহাজে বালু নিয়ে বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করছে বালু ব্যবসায়ীরা। বালু নেয়ার অপেক্ষায় আছে আরো শতাধিক জাহাজ।
নদীর পাড়ের স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, যারা বালি কাঁটে তারা অনেক প্রভাবশালী। আমাদের বাড়ি ঘর হুমকির মুখে থাকা সত্ত্বেও তাদেরকে কিছু বলতে পারি না। মাসের পর মাস এভাবে বালি কাঁটলেও প্রশাসন কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেনা।
এ বিষয়ে জানতে, ড্রেজার ব্যবসায়ী কাউকেই খুঁজে পাওয়া যায় যায়নি। পরে সুমন দেওয়ান ও খবির খাঁ এর মুঠোফোন নাম্বারে একাধিকবার কল করেও তাদের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
গোসাইরহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব আলমগীর হোসেন বলেন, এসব অবৈধ ড্রেজার উচ্ছেদ করতে আমাদের অভিযান অব্যহত রয়েছে। ইতোমধ্যে আমরা কয়েকবার ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করেছি। শীঘ্রই এসব ড্রেজার স্থায়ীভাবে উচ্ছেদ করতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।